আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধ অর্থ পাচারের মূল হোতা নাজিব উল্লাহ

0
59

আজ সারাবেলা রিপোর্ট: আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে দূর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ এবং অর্থ পাচার। দলটির নেতাকর্মীদের চুরি, লুটপাটের টাকা নিরাপদে রাখার এবং দেশ থেকে সুকৌশলে বিদেশে পাচার করার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতেন একটি মহল। আর এই মহলে অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি নাজিব উল্লাহ। তিনি এখনো রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, কক্সবাজারের আলোচিত ইয়াবা ব্যবসায়ী সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিসহ বেশ কিছু আওয়ামী লীগের নেতার অবৈধ টাকা পাচার এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতেন তিনি।

এ কাজে তার অন্যতম সহযোগী ছিলেন তার ভগ্নিপতি সাকের আহমেদ। সাকের পেশায় পোশাকখাতের ব্যবসায়ী। ইসলাম গার্মেন্টসের মালিক। সাকের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত থাকলেও তারও মূল পেশা ছিল হুন্ডিব্যবসা ও অর্থ পাচার করা। সাবেক মেয়র আতিক তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর সভাপতি থাকাকালীন এই সাকের এবং নাজিবের সাথে পরিচয় হয়। এরপর থেকে নাজিব হয়ে উঠেন অর্থপাচার দলের মাফিয়া। তার পুরো নাম এ,কে,এম নাজিব উল্লাহ।

কয়েকবছর আগেও বেকার এই নাজিব উল্লাহ এলাকার পাতি নেতা ছিলেন। আতিকুল ইসলাম এবং আব্দুস শহীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। অভিযোগ রয়েছে, নাজির উল্লাহ আওয়ামী সরকারের সর্বশেষ আমলে ৬-৭ মাসে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প ভাগিয়ে, ওপেন টেন্ডারে এবং কমিশন বাণিজ্য করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আব্দুস শহীদ চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এরপর সাবেক এই মন্ত্রীর আনুকূল্য নিয়ে এই মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন নাজিব উল্লাহ।

নাজিব চক্রের সাথে জড়িত ছিল কৃষি সচিব, কৃষিমন্ত্রী আবদুশ শহীদের এপিএস সুবীর। এমনকি মন্ত্রণালয়ের ড্রাইভার-ক্লিনাররাও এর সাথে জড়িত ছিল। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাবতীয় দেন-দরবার হতো কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন অধিদপ্তরে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে বদলী হয়ে যেতে হতো ঢাকার বাইরে।

অল্প কয়েক মাসের ব্যবধানে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যাওয়া নজিব উল্লাহর সিলেটে রয়েছে হাজার হাজার বিঘা দখলকরা জমি। রয়েছে শত কোটি টাকার এফডিআর। নামে বেনামে রয়েছে একশরও বেশি ব্যাংক একাউন্ট। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে, আরব আমিরাতের দুবাইতে এই কানাডায় রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি এবং দামিদামি গাড়ির সমাহার।

একই ধরনের কার্যক্রম চালাতেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনেও (ডিএনসিসি)। এখানে মেয়রের পিএস মোরশেদ এবং ফরিদ ফেইক কোম্পানি নাম দিয়ে টেন্ডার নিত। সবাই জানতো স্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে, কিন্তু এসব টেন্ডার যেত মূলত মেয়রের পক্ষে। আর এই কাজে অর্জিত অবৈধ টাকা রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্ব থাকতেন নাজিব উল্লাহ। শিশু কৌশলে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে এসব টাকা বিদেশি পাচার করত। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সকল ধরনের প্রোগ্রামে বিশেষ অতিথির মর্যাদায় উপস্থিত থাকতেন এই নজিব উল্লাহ। এমনকি চলাবেলা চলাফেরা করতেন পুলিশ প্রটোকল নিয়ে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here