সারাবেলা ডেস্ক: বাংলাদেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যে ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন আহমেদ। তার ডাক নাম ছিল কাজল। বাবার রাখা প্রথম নাম শামসুর রহমান হলেও পরে তার বাবা ছেলের নাম বদলে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ।
জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা তেমন পছন্দ ছিল না হুমায়ূন আহমেদের। তবু রাত ঠিক ১২টা ১ মিনিটে প্রিয়জনদের নিয়ে কাটতেন জন্মদিনের কেক। বেঁচে থাকতে জন্মদিনটি ঘিরে পুরো দেশে হুমায়ূনভক্তদের মধ্যে সৃষ্টি হতো বিপুল উন্মাদনা। নানা আয়োজনে দিনভর মুখরিত থাকতো দখিন হাওয়া, নুহাশপল্লীতে। এখন তিনি নেই তবুও তার স্মৃতি ও তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আমাদের মন থেকে সরেনি এক বিন্দুও।
হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক। এতো সব অর্জনের মধ্যে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন অত্যধিক ভালো মানুষ ছিলেন। তার চার পাশের মানুষকে তিনি যেমন করে ভালোবাসতেন এই ভালোবাসার ক্ষমতা খুব কম মানুষের মধ্যে আছে।
হুমায়ূন আহমেদের জীবনের গল্প শুনলে বোঝা যায় ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন পাগলাটে ও অগোছালো। কারণ তিনি জীবনকে উপভোগ করতে জানতেন। খুব কম মানুষই জীবনে সৃষ্টিশীল কাজ করে জীবনকে উপভোগ করতে পারেন। হুমায়ূন আহমেদ এমন একজন মানুষ তিনি তার স্বল্প জীবনে জীবনকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করেছেন।
হুমায়ূন আহমেদ যখন মন চায় তখনই তা করতেন। তার জীবনে আফসোস বা অপূর্ণতা বলতে কিছুই ছিলোনা। জীবনে যা মনে চেয়েছেন তাই তিনি করেছেন। তার জীবন ছিল একটি তৃপ্তি দায়ক পরিপূর্ণ জীবন। একজন সুখী মানুষ বলতে তার থেকে ভালো উদাহরণ আর হতে পারেনা।
কর্মজীবনে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, উপন্যাস ছিল বাস্তবমুখী ধারার। তার সৃষ্টিশীল কাজে বারবারই তার মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সে যখন ছবি এঁকেছে তখন ছবি আঁকাতে ভালো করেছেন, গান লিখেছেন সেখানে তিনি ছাপিয়ে গেছেন। যেই ক্ষেত্রেই তিনি বিচরণ করেছেন সেটিই সোনা হয়ে গেছে। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের বিশেষ করে সাহিত্যের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
২০১২ সালে আকস্মিক ক্যান্সার ক্ষণজন্মা এই কথাশিল্পীকে আমরা হারিয়েছি।
সারাবেলা/সংবাদ/এসএ/সাহিত্য/বিনোদন