সারাবেলা ডেস্ক: ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র মুজিব সড়কের উত্তর দিকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের অবস্থান। হাসপাতালের দ্বিতীয় গেট দিয়ে ঢুকে বাঁ দিকে ডায়রিয়া ওয়ার্ড ও ডান দিকে সার্জারি ওয়ার্ড। একটু এগুতেই হঠাৎ নাক ফাটা দুর্গন্ধে পেট ফুলে উঠলো। সামনের কোয়ার্টার রাস্তায় তাকাতেই দুই চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। ডাস্টবিন উপচে পড়ে কেমিক্যাল বর্জ্য ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়।
ডাস্টবিনের ২০০ গজ জায়গা জুরে স্তূপ হয়ে আছে হাসপাতাল বর্জ্যে। ময়লার স্তূপের ৩০০ গজ দূরে পশ্চিম পাশে হাসপাতাল জামে মসজিদ। ওই মসজিদে হাসপাতাল–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়াও আশপাশ এলাকার লোকজন নিয়মিত নামাজ পড়েন। তারাসহ এ রাস্তায় যাওয়া-আসা করতে হয় ওই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ তিনটি আবাসিক ভবনে বসবাসকারী ১৭টি পরিবারের সদস্যদের।
৯ বছর ধরে বকেয়া পৌরকর পরিশোধ না করায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরোধ থেকে হাসপাতাল বর্জ্য পরিষ্কার করা বন্ধ করে দিয়েছে পৌরসভা। প্রায় দুই মাস ধরে ময়লা পরিষ্কার করছে না পৌরসভা। ফলে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের উত্তর দিকে ডাস্টবিন–সংলগ্ন সড়কে স্তূপ করে রাখা বর্জ্য দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগী, চিকিৎসক, নার্স, নিবাসীসহ পথচারীদের। সঙ্গে রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ফরিদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়কে দেওয়া পৌরসভার চিঠি সূত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত ৯ বছর ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের পৌরকর বকেয়া রয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ ১২ হাজার ৮৩ টাকা। এ টাকা পরিশোধ করা হয়নি বলে বর্জ্য অপসারণ করা বন্ধ করে দিয়েছে পৌরসভা।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা যায়, পৌরসভার হিসাব বিভাগ থেকে বকেয়ার বছর ওয়ারি হিসাব ও প্রত্যয়ন চাইলেও তা দিতে পারছে না। এ জন্য বকেয়ার টাকা পরিশোধ করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার ভর্তি হন শহরের আলীপুরের বাসিন্দা মাহাবুব খান। তিনি বলেন, “ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ওয়ার্ডের উত্তর পাশের জানালাগুলো খোলা যাচ্ছে না। যে অবস্থা, তাতে রোগ সারাতে এসে নতুন রোগ নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে না হয়।”
আজসারাবেলা/সংবাদ/জাই/সারাদেশ